আনরিখ নর্কিয়ার সামনে দাঁড়াতেই পারলো না বাংলাদেশের টপ অর্ডার। এই পেসারের তোপে এলোমেলো বাংলাদেশের ব্যাটিং লাইনআপ। বিশাল লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুতেই খেই হারিয়েছে সাকিব আল হাসানরা।
আজ (বৃহস্পতিবার) সিডনি ক্রিকেট গ্রাউন্ডে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সুপার টুয়েলভে মুখোমুখি বাংলাদেশ-দক্ষিণ আফ্রিকা। টস জিতে আগে ব্যাট করা দক্ষিণ আফ্রিকা নির্ধারিত ২০ ওভারে ৫ উইকেটে করেছে ২০৫ রান। সেই লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে বাংলাদেশের স্কোর ১৪ ওভারে ৮ উইকেটে ৮৫ রান।
কঠিন লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুতেই এলোমেলো বাংলাদেশ। সৌম্য সরকারের ব্যাটে ভালো কিছুর আভাস মিললেও সেটা মিলিয়ে যেতে সময় লাগেনি। দ্রুতই সাজঘরে ফিরেছেন তিনি। ওপেনার সঙ্গীকে হারিয়ে নাজমুল হাসান শান্তও টিকে থাকতে পারেননি। খানিক পর সাকিবও তাদের সঙ্গী হয়েছেন!
এই তিনটি উইকেটই নর্কিয়ার। সৌম্যর ব্যাটে ছিল দারুণ শুরু। প্রথম ওভারে কাগিসো রাবাদাকে পরপর দুই বলে ছক্কা মেরেছেন। কিন্তু নর্কিয়া বল হাতে নিতেই সব পাল্টে গেলো। তার প্রথম বলেই ঘায়েল সৌম্য। প্রোটিয়া পেসারের বল বাঁহাতি ব্যাটারের ব্যাট ছুঁয়ে গেলে ধরা পড়েন উইকেটকিপার কুইন্টন ডি ককের গ্লাভসে। তার আগে ৬ বলে ২ ছক্কায় ১৫ রানের ইনিংস খেলেন সৌম্য।
২ বল পরই আবার হতাশা বাংলাদেশের ডাগআউটে। এবার বিদায় নেন শান্ত। ওই নর্কিয়ার বলেই ক্লিন বোল্ড হয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরে যান তিনি। ৯ বলে ১ বাউন্ডারিতে ৯ রান করেন শান্ত।
দক্ষিণ আফ্রিকার ২০৫
রাইলি রোসোর ঝড়ে অসহায় হয়ে পড়লেন বাংলাদেশের ব্যাটাররা। তিনি যখন আউট হয়েছেন, ততক্ষণে দক্ষিণ আফ্রিকার স্কোর ২০০ ছুঁইছুঁই। কুইন্টন ডি ককের সঙ্গে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের রেকর্ড জুটি গড়ার পথে সেঞ্চুরিও তুলে নিয়েছেন রোসো। কুড়ি ওভারের ক্রিকেটে তার টানা দ্বিতীয় সেঞ্চুরিতে রানের পাহাড় গড়েছে প্রোটিয়ারা।
আজ (বৃহস্পতিবার) সিডনি ক্রিকেট গ্রাউন্ডে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সুপার টুয়েলভের ম্যাচে আক্ষরিক অর্থেই ঝড় তুলেছিলেন রোসো। বাঁহাতি এই ব্যাটারের ১০৯ রানের অসাধারণ ইনিংসে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৫ উইকেটে ২০৫ রান করেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। ফলে জিততে ২০৬ রান চাই বাংলাদেশের।
দেখার মতো এক ইনিংস খেললেন রোসো। বাংলাদেশের বোলারদের ওপর চড়াও হয়ে একের পর এক বল সীমানা ছাড়া করলেন তিনি। দাপুটে ব্যাটিংয়ে এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে প্রথম সেঞ্চুরিও তুলে নেন বাঁহাতি ব্যাটার। এটি আবার তার টানা দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি শতক।
শুরু থেকেই তাসকিন-মিরাজদের শাসন করছেন রোসো। চার-ছক্কার ফুলঝুড়িতে করেছেন উপভোগ্য ব্যাটিং। ৫২ বলে পূরণ করেন টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় সেঞ্চুরি। তিন অঙ্কের ঘরে পৌঁছাতে হাঁকিয়েছেন ৭ চারের সঙ্গে ৭ ছক্কা। যদিও ৮৮ রানেই বিদায় নিতে পারতেন এই ব্যাটার। কিন্তু তাসকিনের বলে ক্যাচটা হাতে জমাতে পারেননি হাসান মাহমুদ। অবশেষে তাকে ফেরান সাকিব আল হাসান। লিটন দাসের হাতে ধরা পড়ার আগে ৫৬ বলে খেলেন ১০৯ রানের ইনিংস। যাতে ছিল ৭ চারের সঙ্গে ৮ ছক্কার মার।
রোসোর সঙ্গে মিলে দ্বিতীয় উইকেটে রেকর্ড জুটি গড়েন ডি কক। ৭ রানের সময় তেম্বা বাভুমা আউট হওয়ার পর তাদের তাণ্ডব শুরু। ডি কক-রোসো মিলে গড়েন ১৬৩ রানের বিশাল জুটি। প্রোটিয়া উইকেটকিপার ৩৮ বলে খেলেন ৬৩ রানের ইনিংস, যাতে ছিল ৭ চারের সঙ্গে ৩ ছক্কার মার।