নিজস্ব প্রতিবেদক
তারা সবাই তরুণ। কেউ ছোটখাট ব্যবসা করেন। কেউ কেউ আবার চাকরিতে নিয়োজিত। তবে আহামরি আয়-রোজগার নেই কারো। তার পরও গরিব অসহায় মানুষের জন্য কিছু করার তারণা তাড়িয়ে বেরায় তাদের।
প্রতি ঈদে নিজেদের জমানো টাকা-পয়সা দিয়ে হতদরিদ্র লোকদের সাহায্য সহযোগিতা করে থাকেন। তবে এবার একটু বড় পরিসরে ব্যতিক্রমী আয়োজন করে প্রশংসায় ভাসছে এই তরুণেরা। ঈদ উপলক্ষে নি¤œ-আয়ের লোকজনের জন্য মাত্র ১০ টাকায় বাজার করার সুযোগ করে দেন তারা। এ বাজার থেকে এলাকার ৫০০পরিবার সদাইপাতি কিনে হাসিমুখে বাড়ি ফিরে যান।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ উপজেলার আনন্দবাজারে এ আয়োজনটি করা হয়। করিমগঞ্জ মানবিক সংগঠনের ব্যানারে আয়োজিত ঈদ আনন্দবাজারে ৬ ধরণের পণ্য রাখা হয়। এগুলোর মধ্যে ছিল, এক কেজি পোলাও চাল, এক লিটার সোয়াবিন তেল, এককেজি চিনি, এক প্যাকেট সেমাই, এক কেজি আলু ও এক কেজি পেঁয়াজ।
আয়োজকরা জানান, হতদরিদ্র লোকজন যেন হীনমন্যতায় না ভোগে, বাজারে গিয়ে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে-এ কারণে পণ্যগুলোর প্রতীকী মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে।
বাজারে আসা সবাই অভাবী পরিবারের লোক। উপস্থিত অনেক নারীর স্বামী-সন্তান পর্যন্ত নেই। কেউ কেউ প্রতিবন্ধিতা নিয়ে বেঁচে আছেন কোনোরকম। উচ্চমূল্যের বাজারে সংসার নিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন তারা। তাদের কাছে ঈদের আলাদা কোনো অর্থ নেই। তবে ঈদের আগে মাত্র ১০ টাকায় ব্যাগভর্তি পণ্য পেয়ে এই মলিন মুখগুলোই যেন খুশিতে উজ্জ্বল হয়ে উঠে।
মঙ্গলবার দুপুরে আনন্দ বাজারে বসানো বাজারটি খুলে দেয় আয়োজকরা। উপস্থিত নি¤œ-আয়ের ক্রেতাদের এসময় সহযোগিতা করে স্বেচ্ছাসেবকরা। পণ্যের নির্ধারিত প্রতীকী দামটুকু নিয়ে তাদের হাতে একে একে তুলে দেওয়া হয়ে ছয়পদের বাজারসদাই। জানা গেছে, স্বেচ্ছাসেবকরা আগে দরিদ্র পরিবারগুলো চিহ্নিত করে, তাদের এ বাজারে আসার আমন্ত্রণ জানিয়ে আসে। আর এই আমন্ত্রণ পেয়ে সকাল থেকে ভিড় করে লোকজন।
ঈদে অভাবগ্রস্ত মানুষকে একটু সহযোগিতা আর এ ধরণের উদ্যোগ সারা দেশে ছড়িয়ে দেওয়ার পাশাপাশি সামর্থবানদের উৎসাহিত করতে এই আয়োজন বলে জানালেন, করিমগঞ্জ মানবিক সংগঠনের প্রধান সমন্বয়কারী ইয়াসির আরাফাত। তাদের এ কর্মকাÐ দেখতে সেখানে ছুটে যান করিমগঞ্জ পৌরসভার মেয়র মো. মুসলেহ উদ্দিন ও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান।
তোফাজ্জল হোসেন মুসা, মোহাম্মদ শামীম ও রিফাত জানান, তাদের সংগঠনে ৮০জন সদস্য রয়েছে। তারাই নিজেরা চাঁদা দিয়ে ৫০০ পরিবারের জন্য আয়োজনটি করেছেন।