Sunday , May 5 2024
Breaking News

তীব্র গরমে বাংলাদেশের শিশুরা ‘অতি উচ্চ ঝুঁকিতে’ ইউনিসেফ

বিশ্বজুড়ে পরিবর্তন হয়েছে জলবায়ুর, বাড়ছে তাপমাত্রা। আর এর প্রভাব পড়ছে বাংলাদেশে। বিশেষ করে শিশুরা ‘অতি উচ্চ ঝুঁকিতে’ রয়েছে জানিয়ে বাড়তি সতর্কতার তাগিদ দিয়েছে ইউনিসেফ। অতিরিক্ত গরমে শিশুদের হিট স্ট্রোক, পানিশূন্যতাজনিত ডায়রিয়ার মতো স্বাস্থ্য ঝুঁকির বিষয়গুলো তুলে ধরে প্রতিরোধ ও প্রাথমিক চিকিৎসাসহ তিনটি পরামর্শ দিয়েছে জাতিসংঘের শিশু তহবিল সংস্থাটি।

বুধবার (২৪ এপ্রিল) বাংলাদেশে ইউনিসেফের প্রতিনিধি শেলডন ইয়েট এক বিবৃতিতে এ আহ্বান জানিয়েছেন।

এতে বলা হয়, ‘বাংলাদেশজুড়ে দুঃসহ তাপপ্রবাহ বিরাজ করছে। সারা দেশে এই অসহনীয় তাপমাত্রার শিশুদের স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা নিয়ে ইউনিসেফ গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।

ইউনিসেফের ২০২১ সালের শিশুদের জন্য জলবায়ু ঝুঁকি সূচক (সিসিআরআই) অনুযায়ী, বাংলাদেশে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে ‘অতি উচ্চ ঝুঁকিতে’ রয়েছে শিশুরা।

বাংলাদেশের সবচেয়ে উঞ্চতম মাস এপ্রিল। তার ওপর গত কয়েক বছর ধরে গড় তাপমাত্রা আরও বাড়ছে, উত্তপ্ত হয়ে উঠছে পরিবেশ।

দেশের বড় অংশজুড়ে মৃদু থেকে অতি তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাওয়ায় শিশুদের স্বাস্থ্যঝুঁকি বিবেচনায় সরকার ২৭ এপ্রিল পর্যন্ত স্কুল-কলেজে ছুটি ঘোষণা করেছে।

ইউনিসেফ বলেছে, চলমান এই তাপপ্রবাহসহ জলবায়ু পরিবর্তনের আরও ক্ষতিকর প্রভাব থেকে শিশুদের রক্ষা করার জন্য জরুরি পদক্ষেপ নেওয়ার এখনই সময়। অস্বাভাবিকভাবে তাপমাত্রা বাড়তে থাকায়, আমাদেরকে আগে শিশু ও সবচেয়ে অসহায় জনগোষ্ঠীকে নিরাপদে রাখার প্রতি নজর দিতে হবে।

চলমান এই তাপপ্রবাহ থেকে শিশু ও অন্তঃসত্ত্বাদের সুরক্ষার জন্য সম্মুখসারির কর্মী, বাবা-মা, পরিবার, পরিচর্যাকারী ও স্থানীয় কর্তৃপক্ষের প্রতি তিনটি পরামর্শ তুলে ধরেছে ইউনিসেফ—

প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা

প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা হিসেবে শিশুদের বসা ও খেলার জন্য ঠান্ডা জায়গার ব্যবস্থা করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

তপ্ত দুপুর ও বিকেলের কয়েক ঘণ্টা তারা যেন বাড়ির বাইরে না যায়, সে দিকে নজর রাখা। শিশুরা যেন হালকা ও বাতাস চলাচলের উপযোগী পোশাক পরে, তা নিশ্চিত করা এবং সারা দিন তারা যেন প্রচুর পানি পান করে, সেটাও নিশ্চিত করা।

প্রাথমিক চিকিৎসা

প্রাথমিক চিকিৎসার কয়েকটি বিষয়ে গুরুত্ব দিচ্ছে ইউনিসেফ। তারা বলছে, যদি কোনো শিশু বা অন্তঃসত্ত্বার মধ্যে ‘হিট স্ট্রেস’ বা তাপমাত্রাজনিত সমস্যার উপসর্গ দেখা দেয়, তাহলে তাকে একটি ঠান্ডা বা ছায়া এবং পর্যাপ্ত বাতাস চলাচলের সুযোগ আছে, এমন জায়গায় নিয়ে যেতে হবে।

উপসর্গের মধ্যে আছে মাথা ঘোরা, অতিরিক্ত ঘাম হওয়া, বমি বমি ভাব, হালকা জ্বর, নাক দিয়ে রক্ত পড়া, মাংসপেশিতে টান, ডায়াপার পরার জায়গাগুলোতে ফুসকুড়ি।

ঠান্ডা জায়গায় নিয়ে ভেজা তোয়ালে দিয়ে শরীর মুছিয়ে বা গায়ে ঠান্ডা পানি দিতে হবে। তাকে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি বা খাওয়ার স্যালাইন পান করতে হবে।

হিট স্ট্রেসের উপসর্গ তীব্র হলে যেমন— কোনো কিছুতে সাড়া না দিলে, অজ্ঞান হয়ে পড়লে, তীব্র জ্বর, হৃৎস্পন্দন বেড়ে গেলে, খিঁচুনি দেখা দিলে এবং অচেতন হয়ে পড়লে সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে নিতে হবে।

প্রতিবেশীদের খেয়াল রাখা

তাপপ্রবাহ চলাকালে অসহায় পরিবার, প্রতিবন্ধী শিশু, অন্তঃসত্ত্বা নারী ও প্রবীণ ব্যক্তিরাই সবার আগে অসুস্থ হয়ে পড়েন, এমনকি মৃত্যুর উচ্চ ঝুঁকিতেও তারাই বেশি থাকেন।

গরমের সময় প্রতিবেশীদের খেয়াল রাখার পরামর্শ দিয়ে ইউনিসেফ বলছে, ‘আপনার প্রতিবেশী, বিশেষ করে যারা একা থাকেন, তাদের খোঁজ নিন ও খেয়াল রাখুন।’

About admin

Check Also

কিশোরগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি

কিশোরগঞ্জে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের নির্দেশে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি শুরু করেছে জেলা ছাত্রলীগ। এ সময় তীব্র তাপদাহ থেকে …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *