Sunday , May 5 2024
Breaking News

হাইতির কারাগারে হামলা, ৪ হাজার বন্দি ছিনিয়ে নিলো দুর্বৃত্তরা

বিদেশ ডেস্কঃ

হাইতির রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের প্রধান কারাগারে হামলা চালিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এই হামলার মাধ্যমে প্রায় চার হাজার বন্দিকে ছিনিয়ে নিয়ে গেছে তারা।
এখানে থাকা কারাবন্দিদের মধ্যে দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট জোভেনেল মোয়েসের হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত গ্যাং সদস্যরাও ছিলেন। সোমবার (৪ মার্চ) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

 

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হাইতির রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের প্রধান কারাগারে হামলা চালিয়ে অনেক বন্দিকে মুক্ত করে দিয়েছে সশস্ত্র দলগুলো। স্থানীয় এক সাংবাদিক বিবিসি নিউজকে বলেছেন, সেখানে আটক প্রায় ৪ হাজার বন্দির অধিকাংশই এখন পালিয়ে গেছে। এখানে কারাবন্দিদের মধ্যে ২০২১ সালে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জোভেনেল মোয়েসের হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত গ্যাং সদস্যরাও ছিলেন।

আমেরিকার দরিদ্রতম দেশ হাইতিতে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সহিংসতা আরও খারাপ হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী এরিয়েল হেনরিকে ক্ষমতাচ্যুত করার লক্ষ্যে কাজ করে যাওয়া সশস্ত্র দলগুলো হাইতির রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের প্রায় ৮০ শতাংশ এলাকা নিয়ন্ত্রণ করে থাকে।

বিবিসি বলছে, সহিংসতার সর্বশেষ এই পর্ব শুরু হয় গত বৃহস্পতিবার। ঐদিন হাইতিতে কেনিয়ার নেতৃত্বাধীন বহুজাতিক নিরাপত্তা বাহিনী পাঠানোর বিষয়ে আলোচনা করতে দেশটির প্রধানমন্ত্রী নাইরোবি সফরে যান।
এরপরই গ্যাং নেতা জিমি চেরিজিয়ার (ডাকনাম ‘বারবিকিউ’) তাকে (প্রধানমন্ত্রী এরিয়েল হেনরি) অপসারণের জন্য সমন্বিত আক্রমণ চালানোর কথা ঘোষণা করেন। সাবেক এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ‘আমরা সবাই, প্রাদেশিক শহরের সশস্ত্র গোষ্ঠী এবং রাজধানীর সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো ঐক্যবদ্ধ।

জিমি চেরিজিয়ার নামের এই গ্যাং নেতা রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের বেশ কয়েকটি গণহত্যার পেছনে রয়েছে বলে মনে করা হয়। সমন্বিত আক্রমণ চালানোর ঘোষণা দেওয়ার পর গোলাগুলিতে চার পুলিশ কর্মকর্তা নিহত এবং আরও পাঁচজন আহত হয়েছেন। পরে হাইতির ফরাসি দূতাবাস রাজধানী এবং এর আশপাশে ভ্রমণ না করার পরামর্শ দেয়।

বিবিসি বলছে, হাইতির পুলিশ ইউনিয়ন পোর্ট-অ-প্রিন্সের প্রধান ওই কারাগারটির নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও শক্তিশালী করতে সামরিক বাহিনীকে সাহায্য করতে বলেছিল। কিন্তু শনিবার গভীর রাতে ঐ কারাগার কম্পাউন্ডে হামলা হয়।
ঐ হামলার পর রোববার কারাগারের দরজা খোলা ছিল এবং নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের কোনও চিহ্ন সেখানে ছিল না বলে বার্তাসংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে। তবে পালানোর চেষ্টা করা তিন বন্দি কারাগারের আঙিনার মধ্যে মৃত অবস্থায় পড়েছিল বলেও প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

একজন স্বেচ্ছাসেবক কারাগার কর্মী রয়টার্সকে বলেছেন, ৯৯ জন বন্দি – যার মধ্যে সাবেক কলম্বিয়ান সৈন্যরাও রয়েছেন যারা প্রেসিডেন্ট মোয়েসের হত্যার জন্য জেলে ছিল – ক্রসফায়ারে নিহত হওয়ার ভয়ে কারাগারে থাকাকেই বেছে নিয়েছিল।

মূলত সাবেক প্রেসিডেন্ট জোভেনেল মোয়েসের হত্যাকাণ্ডের পর থেকে হাইতিতে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়েছে। তার স্থলাভিষিক্ত কাউকে করা হয়নি এবং ২০১৬ সাল থেকে ক্যারিবীয় অঞ্চলের এই দেশটিতে নির্বাচনও অনুষ্ঠিত হয়নি।
যদিও একটি রাজনৈতিক চুক্তির আওতায় হাইতিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল এবং অনির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী এরিয়েল হেনরি গত ৭ ফেব্রুয়ারির মধ্যে পদত্যাগ করার কথা ছিল, কিন্তু সেটি হয়নি।

চলতি বছরের জানুয়ারিতে জাতিসংঘ জানায়, গত বছর হত্যা, আহত এবং অপহরণসহ হাইতিতে গ্যাং সহিংসতার শিকার হয়েছেন ৮ হাজার ৪০০ জনেরও বেশি মানুষ। যা দেশটিতে ২০২২ সালে সহিংসতার শিকার হওয়া মানুষের সংখ্যার চেয়ে দ্বিগুণেরও বেশি।

About admin

Check Also

তীব্র গরমে শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় প্রাথমিক-মাধ্যমিকে অনলাইনে ক্লাস চালুর চিন্তা

দেশে তীব্র তাপপ্রবাহে শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় দীর্ঘ ছুটি শেষেও খোলেনি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। গত ২১ এপ্রিল ছুটি …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *