Sunday , May 5 2024
Breaking News

যে ১০টি স্ক্রিনিং টেস্ট পুরুষদের জন্য খুব প্রয়োজন

ডেস্ক লাইফস্টাইলঃ

বয়সের সঙ্গে সঙ্গে নানান রোগ-ব্যাধি শরীরে বাসা বাঁধতে শুরু করে।  আর রোগ-ব্যাধি সব সময় বলে-কয়ে আসে না। তাই বেশির ভাগ সময় রোগের জটিল পর্যায়ে মানুষ চিকিৎসকের শ্বরণাপন্ন হয়। তবে রোগের প্রাথমিক পর্যায়ে সঠিক রোগ শনাক্ত করে যথাযথ চিকিৎসা নিলে মারাত্মক সব জটিলতা এড়ানো সম্ভব। প্রাথমিক অবস্থায় রোগ শনাক্ত করতে যেসব পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়, তাকে স্ক্রিনিং টেস্ট বলে।

উপসর্গ দেখা দেয়ার আগে রোগের আশঙ্কা ধরতে করতে হয় স্ক্রিনিং টেস্ট। যেমন বয়স বেশি, শরীর স্থূল, শুয়ে-বসে থাকা জীবন, অনেক মানসিক চাপ- এসবের পারিবারিক ইতিহাস থাকলে স্ক্রিনিং টেস্ট করা আবশ্যক। এ বিষয়ে পরামর্শ দিয়েছেন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সাবেক অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. শুভাগত চৌধুরী।

যে ১০টি স্ক্রিনিং টেস্ট জরুরি

 

১. ফুসফুসের ক্যানসার
আমেরিকায় এই ক্যানসার প্রবল তবে আমাদের দেশেও এর বিস্তার কম নয়। এর প্রধান কারণ হলো ধূমপান। অন্যের ধূমপানের ধোঁয়া দীর্ঘদিন গ্রহণ করলেও এই ক্যানসারের ঝুঁকির মধ্যে থাকে। ধূমপান ও পেসিভ স্মোক থেকে দূরে থাকা এই ক্যানসার থেকে রক্ষা পাওয়ার অন্যতম উপায়।

ফুসফুসে ক্যানসার আছে কি নেই, সে জন্য স্ক্রিনিং টেস্ট হলো লো ডোজ সিটি স্ক্যান। বয়স ৫৫ থেকে ৮০ হলে আর খুব বেশি ধূমপানের ইতিহাস থাকলে এই স্ক্রিনিং টেস্ট করতে হয়।

২. প্রোস্টেট ক্যানসার
পুরুষের অন্যতম প্রধান ক্যানসার এটি। এই ক্যানসার ধীরে ছড়ালেও অনেক সময় তা হতে পারে আগ্রাসী। এর স্ক্রিনিং টেস্ট হলো ডিজিটাল রেক্টাল এবং রক্তের পিএসএ টেস্ট। আমেরিকান ক্যানসার সোসাইটির পরামর্শ, পিএসএ ৫০ হলে গড়পড়তা ঝুঁকি আর ৪৫ হলে আছে উচ্চ ঝুঁকি। আফ্রিকান-আমেরিকানদের ৪০ হলে জোরালো ঝুঁকি।

৩. টেস্টিকুলার ক্যানসার
এই ক্যানসার খুব কম। হলে ২৫ থেকে ৪০ বছর বয়সের মধ্যে হতে পারে। আগে নির্ণয় করা গেলে এর চিকিৎসা সহজ। আর তাই শুক্রথলি টিপে এতে কোনো গুটি, স্ফীতি বা শুক্রাশয়ের আকার-আয়তনে পরিবর্তন হলো কি না, নিজেকেই পরীক্ষা করতে হবে।

৪. কলোরেক্টাল ক্যানসার
কোলনের ভেতরের আস্তরণে ছোট গ্রোথ বেড়ে একসময় হয় ক্যানসার। তাই এটি হওয়ার আগে পলিপ খুঁজে একে অপসারণ করা হলো এ ধরনের ক্যানসার থেকে বাঁচার উপায়। ৫০ বছরে শুরু হয় স্ক্রিনিং। ঝুঁকি থাকলে আরও আগে করা যেতে পারে। মলে সুপ্ত রক্তের উপস্থিতি নির্ণয় করতে হবে এ জন্য। আর আসল পরীক্ষা হলো কলোনস্কপি। নমনীয় একটি নল, যার অগ্রভাগে থাকে একটি ক্যামেরা, তা মলদ্বার দিয়ে ঢুকিয়ে ডাক্তার পুরো কোলন দেখে নেন। এর পলিপ পেলে তা সরিয়ে ফেলতে পারেন।

৫. ত্বকের ক্যানসার
অনেক রকমের স্কিন ক্যানসার আছে। সবচেয়ে বিপজ্জনক হলো মেলানমা। রোদের আলোয় শরীর বাদামি করা কিংবা খররোদে বেশি সময় থাকা এর ঝুঁকি বাড়িয়ে তোলে। প্রতিদিন ত্বক পরীক্ষা করুন। কোনো দাগ, ছোপ, তিল, আঁচিলে পরিবর্তন হয় কি না, এর আকার, আয়তন বা রঙের বদল কী হলো, তা খেয়াল রাখুন।

৬. উচ্চ রক্তচাপ
বয়স, ওজন আর জীবনযাপনের সঙ্গে এটি জড়িত। অনেকের উচ্চ রক্তচাপ আছে, কিন্তু জানে না। স্ক্রিনিং করলে পাওয়া যাবে দুটি সংখ্যা, সিস্টলিক আর ডায়াস্টলিক। রক্তচাপ ১২০ বাই ৮০-এর নিচে থাকলে ভালো আছে বোঝা যাবে।

৭. কোলেস্টেরল 
রক্তে খুব বেশি মন্দ কোলেস্টেরল এলডিএল থাকলে হৃদ্‌রোগ আর স্ট্রোকের আশঙ্কা বাড়ে। তাই চিকিৎসকের পরামর্শে লিপিড প্রোফাইল করা আর ঝুঁকি বেশি হলে কম বয়সে স্ক্রিন টেস্ট করা দরকার। কোলেস্টেরল এলডিএল, এইচডিএল ট্রাইগ্লিসারিয়াইড মান খেয়াল করে চিকিৎসকের পরামর্শমতো চলতে হবে।

৮. টাইপ ২ ডায়াবেটিস
অধিকাংশ মানুষ জানে না তাদের ডায়াবেটিস আছে। এই রোগ অনিয়ন্ত্রিত থাকলে হতে পারে হৃদ্‌রোগ, স্ট্রোক, কিডনি রোগ কিংবা অন্ধত্ব। হতে পারে স্নায়ুর ক্ষতি। রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে থাকলে সেই সব জটিলতা হবে না। এ জন্য করা উচিত খালি পেটে রক্তের গ্লুকোজ আর এআইসি টেস্ট।

৯. এইচআইভি
এইচআইভি স্ক্রিনিং করা ভালো। কেউ জানে না কার সংক্রমণ আছে। এ জন্য করতে হবে এলাইজা আর ইআইএ টেস্ট।

১০. গ্লুকোমা
স্ক্রিনিং টেস্ট হলো চোখের ভেতর উচ্চ চাপ আছে কি না, সেটা পরীক্ষা করা। ৪০ বছর বয়স থেকে স্ক্রিনিং করা উচিত গ্লুকোমা নির্ণয়ে।

 

About admin

Check Also

তীব্র গরমে শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় প্রাথমিক-মাধ্যমিকে অনলাইনে ক্লাস চালুর চিন্তা

দেশে তীব্র তাপপ্রবাহে শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় দীর্ঘ ছুটি শেষেও খোলেনি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। গত ২১ এপ্রিল ছুটি …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *